সদৃশ আরোগ্য কলায় ঔষধের প্রয়োগ কৌশল
আলোচনায়ঃ
৫০ বছরের অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথ
ডা. রেজাউল করিম
হোমিওপ্যাথির স্বরুপ উন্মোচন কারী লেখক
আন্তর্জাতিক হোমিওপ্যাথিক গবেষক ও লেখক
........ইতঃপূর্বে (১৮৩৪ সালের শুরুতে ) আমি আমাদের আরোগ্যকলাসংক্রান্ত যা কিছু জনতাকে বলেছি, তন্মধ্যে রোগীকে ঔষধের মাত্রাসমূহ প্রদানের সম্ভাব্য উৎকৃষ্ট পন্থা সম্পর্কে অভিজ্ঞতা লাভের বিষয়টি ছিল, এবং আমি এ বিষয়ে যা উত্তম পেয়েছি তা এতদ্বারা উপস্থাপন করছি।
উচ্চশক্তিকৃত ঔষধের ক্ষুদ্র একটি বড়ি শুদ্ধভাবে জিহ্বার উপর রাখলে অথবা একটি শিশিতে এমন একটি অথবা অধিক সংখ্যক বড়ি রেখে শিশির মুখ খোলে মধ্যমভাবে আঘ্রাণ নিলে এমন একটি ক্ষুদ্র ও দুর্বল মাত্রা হবে যার ক্রিয়া অল্প সময় স্থায়ী হবে। স্বভাবে এমন উত্তেজনাসাধ্য অসংখ্য রোগী আছে যে, তারা সামান্য অচির ব্যাধিতে এমন মাত্রা দ্বারা এতো পর্যাপ্তভাবে প্রভাবিত হয় যে, ঔষধটি যদি সদৃশভাবে নির্বাচিত হয় তাহলে তদ্দ্বারা আরোগ্য হবে। তথাপি রোগীদের মধ্যে তাদের শীঘ্রকোপিত্ব, তাদের বয়স, তাদের আত্মীক এবং দৈহিক বিকাশ, তাদের জীবনীশক্তি এবং বিশেষভাবে তাদের ব্যাধির প্রকৃতিসংক্রান্ত অবিশ্বাস্য রকম ভিন্নতা থাকায় তাদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে এবং তাদেরকে ঔষধের মাত্রাসমূহ প্রয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাপক ভিন্নতা আবশ্যক হয়। কারণ তাদের ব্যাধিসমূহ নানা প্রকার হয়ে থাকে: প্রাকৃতিক এবং সরল কিন্তু সম্প্রতি আবির্ভূত ব্যাধি, অথবা তা প্রাকৃতিক এবং সরল কিন্তু পুরাতন ব্যাধি, অথবা তা একটি জটিল ব্যাধি (কতগুলো মিঅ্যাজমের মিশ্রণ) অথবা যা প্রায়ই ঘটে এবং খুব খারাপ অবস্থায় পৌঁছে, তারা এমন সব রোগী যাদেরকে অযৌক্তিক চিকিৎসার মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে এবং ঔষধীয় ব্যাধিতে পূর্ণ করে দেওয়া হয়েছে।
আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি এবং এতে কোনো সন্দেহ নেই, যেহেতু আমার অনুসারীদের কাছেও প্রদর্শিত হয়ে যে যেকোনো পরিমাপের রোগে (এমনকি খুব তরুণ এবং আধা তরুণ, কঠিন, এবং অধিকতর কঠিন ব্যাধিতেও) শক্তিশালী হোমিওপ্যাথিক ক্ষুদ্র বড়ি অথবা বড়িগুলো জলে মিশিয়ে এবং এই দ্রবণকে বিভক্ত মাত্রায় রোগীকে দিলে সর্বাধিক উপকারী হয়। এই পদ্ধতিতে আমরা সাত থেকে বারো টেবিল চামচ জলে মিশিয়ে ঔষধ দেই, তার সাথে অন্যকিছু যোগ করি না, তরুণ এবং সংকটজনক ব্যাধিতে আমরা ছয়, চার, অথবা দুই ঘন্টা পর পর ঔষধ সেবন করতে দেই, জরুরী অবস্থায় এমনকি এক ঘন্টা অথবা অর্ধ ঘন্টা পর পর এক মাত্রা করে ঔষধ দেই; দুর্বল এবং শিশু রোগীকে এক টেবিল চামচ ঔষধের কেবল অল্প একটু অংশ দিতে হবে (এক অথবা দুই চা চামচ করে)।
চিররোগসমূহে আমি কমপক্ষে একদিন পর পর, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রতিদিন যথোপযুক্ত ঔষধীয় দ্রবণের এক মাত্রা (যেমন এক চামচ) করে সেবন করতে দিয়ে বেশি সুফল পেয়েছি।
কিন্তু অল্প দিন পরেই জল ( এমনকি পরিস্রত জল) নষ্ট হতে শুরু করে, যার ফলে জলে ধারণকৃত যৎসামান্য ঔষধের শক্তি ধ্বংস হয়ে যায়, তাই দ্রবণের সাথে সামান্য সুরাসার মিশিয়ে দেওয়া আবশ্যক অথবা যেখানে তা সম্ভব হয় না সেখানে দ্রবনের সাথে ছোট এক টুকরা শক্ত কয়লা যোগ করে রাখতে হবে। তাতে সুরাসারের লক্ষ্য অর্জিত হবে, কিন্তু এর ফলে দ্রাবণ কয়েক দিনের মধ্যেই কালো রং ধারণ করে। কারণ ঔষধের প্রত্যেক মাত্রা সেবনের আগে দ্রাবণে ঝাঁকি দিতে হয়, যা নিম্নে বর্ণিত হচ্ছে।
অগ্রসর হওয়ার আগে পর্যবেক্ষণ করা গুরুত্বপূর্ণ এই যে, আমাদের জীবনীশক্তি ঔষধের অপরিবর্তিত একইরূপ মাত্রা ভালভাবে সহ্য করতে পারে না, এমন কি পরস্পরাক্রমে দুই মাত্রাও নয়, রোগীর ক্ষেত্রে আরো নয়। কারণ এরূপ অবস্থায় ঔষধের পূর্ববর্তী মাত্রার সুফল আংশিকভাবে নিষ্ক্রয় হবে অথবা ঔষধের স্বকীয় নতুণ লক্ষণ যা রোগের সাথে আগে বিদ্যমান ছিল না তা উপস্থিত হয়ে আরোগ্য, বাধাগ্রস্ত করবে। এইভাবে এমন কি উত্তমভাবে নির্বচিত সদৃশ ঔষধ কুফল ফল উৎপাদন করবে এবং উদ্দেশ্য হাসিল হবে অসম্পূর্ণভাবে অথবা কিছুই অর্জিত হবে না। সেই কারণে পুনঃপুন মাত্রা প্রদান সম্পর্কে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের মধ্যে অনেক মতপার্থক্য এসেছে।
কিন্তু একটি এবং একই ঔষধ বার বার সেবন করতে হলে (গুরুতর চিররোগের আরোগ্য নিশ্চত করতে যা অপরিহার্য) যদি প্রতিবারই ঔষধের মাত্রা এর শক্তির ধাপে শুধু সামান্য পরিবর্তন এবং পরিবর্ধন করা হয়, তাহলে রোগীর জীবনিশক্তি শান্তভাবে এবং যেন সেচ্ছায় একই ঔষধ এমনকি ক্ষনিক বিরতি দিয়েও একাধিক্রমে বহুবার সুফলের সাথে গ্রহণ করে, প্রতিবারই রোগীর কল্যাণ বৃদ্ধি পেতে থাকে।
শক্তির ধাপে এইরূপ সামান্য পরিবর্তন সংঘটিত হয়, যদি একটি অথবা একাধিক ক্ষুদ্র বড়ি মিশ্রিত দ্রবণের বোতলে প্রতিবার ঔষধ সেবনের আগে শুধু পাঁচ অথবা ছয় বার ভালভাবে ঝাঁকি দেওয়া হয়।
এখন প্রস্তুতকৃত প্রবণ চিকিৎসক এইভাবে ব্যবহার করে যখন শেষ করে ফেলে তখনও যদি ঔষধটি কল্যাণকর হতে থাকে তাহলে সে একই ঔষধের নিম্ন শক্তির একটি অথবা দুটি ক্ষুদ্র বড়ি নিবে, (উদাহরণসরূপ, সে পূর্বে যদি ত্রিশ শক্তির প্রবণ ব্যবহার করে থাকে তাহলে এখন চব্বিশ শক্তির একটি অথবা দুটি ক্ষুদ্র বড়ি নিবে) এবং যত চামচ জল আবশ্যক তত চামচ জলে দ্রবণ প্রস্তুত করবে, বোতলে ঝাঁকি দিবে এবং তার সাথে সামান্য পরিমান সুরাসার যোগ করবে অথবা বোতলের ভিতরে কয়েক টুকরা কাঠকয়লা দিবে। এই পরবর্তী দ্রবণটি একই পদ্ধতিতে সেবন করতে হবে অথবা একটু লম্বা বিরতি দিয়ে, সম্ভবত দ্রবনের পরিমানও প্রতিমাত্রায় কমিয়ে নিতে হবে; কিন্তু প্রতিবারই দ্রবণটি পাঁচ অথবা ছয়বার ঝাকতে হবে। ততদিন পর্যন্ত এই ঔষধ চলতে থাকবে যতদিন পর্যন্ত উন্নতি সাধন করে এবং যতদিন পর্যন্ত নতুন লক্ষণ (যে ধরনের লক্ষণ এইরূপ রোগে অন্যকোনো রোগীর দেহে কখনো সংঘটিত হয় নি) উপস্থিত না হয়। কারণ এরকম একটি অবস্থায় একটি নতুন ঔষধ ব্যবহার করতে হবে। যদি কোনো দিন ঔষধটি খুব উচ্চ কোনো ক্রিয়া উৎপাদন করে তখন এক দিনের জন্য মাত্রা স্থগিত রাখতে হবে। কেবলমাত্র যদি রোগের লক্ষণসমূহ উপস্থিত হয় কিন্তু বেশ বর্ধিত অবস্থায় এমনকি ঔষধের স্বাভাবিক ব্যবহারকালে, তাহলে, তখন ঔষধের ব্যবহার এক অথবা দুই সপ্তাহের জন্য বন্ধ রাখার সময় আসে এবং ব্যাপক উন্নতির জন্য প্রতীক্ষায় থাকতে হয়। (পাদটীকায় দেখুন )
ঔষধীয় দ্রবণ যখন শেষ হয়ে যায়, এবং একই ঔষধ অব্যহত রাখা আবশ্যক প্রতীয়মান হয়, তখন চিকিৎসক যদি একই শক্তির ঔষধ থেকে নতুন প্রবণ প্রস্তুত করতে ইচ্ছা করে তাহলে নতুন দ্রবণে অনেক বেশি সংখ্যক ঝাঁকি আবশ্যক হবে, পূর্ববর্তী দ্রবণের সকল মাত্রার ঝাঁকির সংখ্যা একত্র যোগ করে যে সংখ্যা হয় তার সমসংখ্যক এবং তার পর আরো অতিরিক্ত কয়েকটি ঝাঁকি দিতে হবে, রোগীকে প্রথম মাত্রা ঔষধ প্রদানের আগে এইরূপ বেশি সংখ্যক ঝাঁকি দিতে হবে, কিন্তু তার পর থেকে উক্ত দ্রবণের প্রত্যেক মাত্রা সেবনের আগে মাত্র পাঁচ অথবা ছয় বার ঝাঁকি দিতে হবে।
এই প্রণালীতে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক সুনির্বাচিত ঔষধ থেকে সকল উপকারীতাই লাভ করবে, যা চিররোগের যে কোনো বিশেষ রোগীতে সেবনকৃত মাত্রা কতৃক অর্জিত হবে।
কিন্তু যদি চিকিৎসক কর্তৃক মুখ এবং অন্ননালীর স্নায়ুসমূহ ছাড়াও স্পর্শকাতর স্নায়ুসমূহে একই সময়ে এই একই যথাযথ ঔষধটির মাধমে পীড়িত দেহপ্রণালীকে প্রভাবিত করা হয়, অর্থাৎ এই একই যথোচিত ঔষধ যা, উপকারী হতে দেখা গেছে সেই ঔষধের জলীয় দ্রবণ যদি একই সাথে স্পর্শকাতর অঙ্গে মালিশ করা হয়। (এমন কি অল্প পরিমাণে) দেহের রোগ মুক্ত এক বা একাধিক অঙ্গে, উদাহরণসরূপ, বাহুতে, অথবা উরুতে, অথবা পায়ে, যেখানে কোনো চর্মরোগ, কিংবা ব্যথা বা খিচুনি নেই)-তাহলে আরোগ্য সহায়ক ক্রিয়া অনেকগুনে বৃদ্ধি পায়। এইভাবে দ্রবণ মালিশের ক্ষেত্রে বাহু সমূহ পরিবর্তিত হবে, প্রথমে এক অঙ্গে, তার পর অপর অঙ্গে মালিশ করতে হবে। এই ভাবে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক চিররোগটির জন্য সদৃশভাবে উপযোগী ঔষধটি থেকে অধিকতর সুফল লাভ করবে এবং ঔষধটি শুধু আভ্যন্তরীণভাবে প্রয়োগ করা অপেক্ষা তাকে অধিকতর দ্রুত আরোগ্য করতে পারবে।
এই কর্মপদ্ধতি স্বয়ং আমার মাধ্যমে প্রায়ই প্রমাণিত হয়েছে এবং অসাধারনভাবে আরোগ্য সহায়ক হতে দেখা গেছে হ্যা, চমকপ্রদ সুফল পেয়েছি; সেবনকৃত ঔষধের সাথে একই সময়ে বাহ্যিকভাবে ত্বকে মালিশের মাধ্যমে। বস্তুতঃ বিরল ঘটনা হলেও এই পদ্ধতি বিস্ময়কর আরোগ্যসমূহ বর্ণনা করেছে, যেখানে সুস্থ ত্বকবিশিষ্ট চিরপঙ্গু রোগীরা এইরূপ খনিজ জলে কয়েকবার স্নানের মাধ্যমে দ্রুত এবং স্থায়ীভাবে আরোগ্য লাভ করেছে, যে খনিজ জলে তাদের চিররোগের সাথে ব্যাপক মাত্রায় সাদৃশ্যপূর্ণ ঔষধীয় উপাদান বিদ্যমান ছিল।
সুতরাং যেসব বাহুতে ঔষধীয় দ্রবণ মালিশ করতে হবে তা অবশ্যই চর্মরোগ মুক্ত হতে হবে। এখানে পরিবর্তন ও রদবদল মানে হচ্ছে, যখন কতগুলো বাহু চর্মরোগ মুক্ত তখন পর্যায়ক্রমে একেকদিন একেক বাহুতে ঔষধ মালিশ করতে হবে, (ভালো হয় যেদিন ঔষধ সেবন করা হয় সেইদিন মালিশ না করলে)। সামান্য পরিমাণ দ্রবণ হাতে নিয়ে বাহুতে মালিশ করতে হবে যতক্ষণ পর্যন্ত না তা শুকিয়ে যায়। এতদুদ্দেশ্যেও দ্রবণের বোতলে পাঁচ অথবা ছয় বার ঝাঁকি দিতে হবে।
ঔষধ প্রয়োগ প্রণালী হিসাবে উপরে বর্ণিত ব্যবস্থা সুবিধাজনক এবং এত সুবিধাজনক যে এটি নিশ্চিতভাবে চিররোগের আরোগ্য ত্বরান্নিত করে, তথাপি গরম মৌসুমে জলীয় দ্রবণ সংরক্ষণ করার জন্য এর সাথে বেশ পরিমান সুরাসার অথবা কড়া মদ (Whiskey) অথবা কাঠকয়লার কয়েকটি টুকরা যোগ করা সম্পর্কে অনেক রোগীর পক্ষ থেকে আমার কাছে আপত্তি এসেছে।
সুতরাং সম্প্রতি আমি রুচিশীল রোগীদের পছন্দনীয় নিম্নোক্ত প্রয়োগ পদ্ধতি আবিষ্কার করেছি। পাঁচ টেবিল চামচ বিশুদ্ধ জল এবং পাঁচ টেবিল চামচ কড়া মদ(French brandy) একত্র মিশিয়ে বোতলে ভরে হাতের কাছে রাখবো তা থেকে (দ্রবণ সবল অথবা দুর্বল যেরূপ করতে চাই সেই হিসেবে) একটি ছোট শিশিতে দুইশত, তিনশত অথবা চারশত ফোটা দ্রবণ ঢেলে দিয়ে এ শিশির অর্ধেক অংশ পূর্ণ করবো এবং উক্ত শিশিতে ঔষধীয় বিচূর্ণ অথবা ঔষধ সিক্ত ক্ষুদ্র একটি অথবা একাধিক বড়ি দিব। এই শিশির মুখ বন্ধ করবো এবং ঔষধ না গলা পর্যন্ত ঝাঁকি দিতে থাকবো। এই বোতল থেকে রোগীর শীঘ্রকোপিত্ব এবং জীবনীশক্তির অবস্থা অনুসারে এক, দুই, তিন, অথবা কয়েক ফোটা করে ঔষধ একটি কাপে এক চামচ জলে মিশিয়ে নিতে হবে; তারপর তা ভালভাবে ঝাঁকি দিতে হবে এবং রোগীকে দিতে হবে এবং যেখানে বিশেষ সতর্কতা আবশ্যক সেখানে কেবল আধা চামচ ঔষধ সেবন করবে এবং এই দ্রবনের আধা চামচ উপরিউক্ত নিয়মে বাহ্যিক মর্দনের জন্য ব্যবহার করবে।
ঐ দিনগুলোতে, যখন ঔষধ শুধু বাহ্যিকভাবে ব্যবহার করা হবে, এ ছাড়াও যখন আভ্যন্তরীনভাবেও গ্রহণ করা হবে, তখন ফোটাসমূহ ধারণকৃত ছোট শিশি (ঔষধের শিশি) প্রতিবারই পাঁচ অথবা ছয় বার অবশ্যই সজোরে ঝাঁকি দিতে হবে:......................
(বিঃদ্রঃ-এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্যের জন্য, ডা. রেজাউল করিম স্যারের অনুবাদ ও ব্যাখ্যা গ্রন্থ "চিরোরোগের কারণ তাহাদের বৈশিষ্ট্য এবং তাদের হোমিওপ্যাথিক প্রতিকার" বইটি পড়ুন)
★পাদটীকা-
একিউট রোগের চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক উপরোক্তভাবেই কাজ করবেন। সে সুনির্বাচিত ঔষধের উচ্চশক্তিকৃত একটি (দুটি) ক্ষুদ্র বড়ি সাত, দশ, অথবা পনেরো টেবিল চামচ জলে মিশিয়ে (সুরাসার যোগ না করে) বোতলটি ভালভাবে ঝেকে দিবে। তারপর সে রোগের তীব্রতা এবং 'বিপজ্জনক অবস্থা অনুসারে রোগীকে অর্ধঘণ্টা, এক ঘণ্টা, দুই ঘণ্টা, তিন ঘন্টা, চার ঘণ্টা অথবা ছয় ঘণ্টা পর পর ভালভাবে ঝাঁকি দিয়ে পূর্ণ অথবা আধা টেবিল চামচ করে সেবন করতে দিবে। অথবা শিশুদের ক্ষেত্রে আরো কম করে দিবে। চিকিৎসক যদি কোনো নতুন লক্ষণ প্রকাশ পেতে না দেখে তাহলে সে এইরূপ বিরতিতে ঔষধ সেবন অব্যহত রাখবে যতক্ষণ পর্যন্ত না প্রথম প্রকাশিত লক্ষণটি বৃদ্ধি পেতে শুরু করে; তারপর সে দীর্ঘ বিরতি দিয়ে একেকবারে সামান্য পরিমাণ করে ঔষধ সেবন করতে দিবে।
সুবিধিত যে, কলেরা রোগে উপযোগী ঔষধটির মাত্রা খুব বেশি ঘন ঘন দিতে হয়।। শিশুদিগকে সর্বদা তাদের পান পাত্র থেকে ঔষধ দিতে হবে। পানের জন্য এক চা- চামচ ঔষধীয় জল তাদের নিকট অস্বাভাবিক এবং সন্ধেহজনক এবং সেই কারণে তারা স্বাদহীন পানীয় তৎক্ষণাৎ প্রত্যাখ্যান করবে। তাদের জন্য ঔষধের সাথে চিনিমিশ্রিত সামান্য জল মিশিয়ে ঝাঁকি না দিয়ে সেবন করতে দিতে হবে।
আলোচনা নোটঃ-
ডা. এম আল মামুন
ডিএইচএমএস, ঢাকা