গর্ভ’স্থ শিশুর বংশগত রোগ প্রতিরোধে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা

গর্ভস্থ শিশুর বংশগত রোগ প্রতিরোধের জন্য হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা। 

"সুস্থ জাতী গঠনে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার বিকল্প নেই" 

গভাবস্থায় মাকে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় প্রদান করলে গর্ভস্থ শিশুর বংশগত রোগ প্রতিরোধ হয় এবং সুস্থ শিশুর জন্ম হয়। 

জেনিটিক রোগ / বংশগত রোগ :  যেমনঃ-  দাদা-দাদী, নানা-নানি,  মা-বাবার ডায়াবেটিস, এইচবিএস, এইচআইভি, শ্বাসকষ্ট, যক্ষা, বাতব্যথা, বাতজ্বর,  সিফিলিস, গনোরিয়া ইত্যাদি সহ নাম না জানা অধিকাংশ রোগ। 

চিকিৎসা প্রনালীঃ- (ডাক্তার দের জন্য) 

আলোচকঃ- ডা. রেজাউল করিম- আন্তর্জাতিক হোমিওপ্যাথিক গবেষক ও লেখক। 

...সোরা আরো দুটি প্রক্রিয়ায় সংক্রমিত হতে পারে। প্রথমত মাতৃগর্ভ থেকে শিশুটি পিতামাতার ধাতগত অনেক বৈশিষ্ট্যের উত্তরাধিকারী হয়। পিতামাতার দেহে সোরা, সিফিলিস এবং সাইকোসিস মায়াজম সক্রিয় অবস্থায় থাকলে তাদের সন্তান মাতৃগর্ভ হতে এসব মায়াজম দ্বারা সংক্রমিত হয়। যখন মাতৃগর্ভ হতে কোনো সন্তান অসুস্থ অবস্থায় জন্মগ্রহণ করে তখন স্পষ্টতই বলা যায় যে, শিশুটি মাতৃগর্ভে মায়াজম কর্তৃক সংক্রমিত হওয়ার ফলেই অসুস্থ হয়ে জন্ম নিয়েছে। 

শিশুরা সাধারণত অঙ্গবিকৃতি, মাথার টিউমার, মস্তিষ্কে শোথ, জন্ডিস, পুষ্টিহীনতা ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হয়ে জন্মগ্রহণ করে। মাতৃগর্ভে শিশু কিভাবে স্থায়ী মায়াজম দ্বারা সংক্রমিত হয় তা বলা মুশকিল। কিন্তু আমরা আমাদের দেশে বহু বিকলাঙ্গ শিশু জন্ম নিতে দেখেছি, মাথায় টিউমার জন্মের পরেই দেখেছি, শিশুর হাইড্রোকেফালাস, জন্ম অন্ধত্ব ইত্যাদি অবস্থা কি প্রমাণ করেনা যে শিশুটি মাতৃগর্ভে মায়াজম কর্তৃক সংক্রমিত না হলে কিছুতেই এতবড় ব্যাধিতে আক্রান্ত হতো না। 

আবার কোনো কোনো দম্পত্তির মৃত সন্তান জন্ম নেয়। ভ্রুণটি কোনো রোগের কারণেই তো মৃত্যুবরণ করে। আর রোগের মৌলিক কারণ স্থায়ী মায়াজমসমূহ। তাই নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, মাতৃগর্ভে শিশুরা মায়াজম কর্তৃক সংক্রমিত হয়।

মহাত্মা হ্যানিম্যান অর্গানন অভ মেডিসিনের ১৬৪ নম্বর পাদটীকায় বলেছেন যে, “কিন্তু 'মা'দের গর্ভ অবস্থায় অনুগ্র এন্টিসোরিক চিকিৎসার মাধ্যমে বিশেষত ২৭০ নম্বর সূত্রে প্রদত্ত নির্দেশনা অনুসারে প্রস্তুতকৃত সূক্ষ্ম শক্তির সালফার সেবন করিয়ে অধিকাংশ চিররোগের উৎস-সোরা-যা জন্মগতভাবে শিশুর দেহে সংক্রমিত হতে পারে তা থেকে একই সাথে গর্ভবর্তী মা ও ভ্রুণ উভয়কে মুক্ত করা যায় এবং ঐ উপায়ে অগ্রিমভাবে গর্ভও রক্ষা করা যায়। সত্যই গর্ভবতী মহিলা যাদের এভাবে চিকিৎসা করা হয়েছে তারা স্বাভাবিকভাবে আরো অধিক সুস্থ, সবল সন্তান জন্ম দিয়ে বিস্ময় সৃষ্টি করেছে। এটি আমার আবিষ্কৃত সোরাতত্ত্বের সত্যতার একটি নতুন সমর্থন।” 

মহাত্মা হ্যানিম্যানের উপরিউক্ত নির্দেশনা মোতাবেক গর্ভবতী মহিলাকে গর্ভের শুরু থেকে পঞ্চাশ সহস্রতমিক পদ্ধতি অনুসারে শক্তিকৃত সালফার ২/০ শক্তির দ্রাবণ প্রতিদিন সকালে খালিপেটে এক মাত্রা করে পনেরো দিন সেবন করবে। তারপর সালফার ৩/০ শক্তির জলীয় দ্রাবণ প্রতিদিন সকালে খালিপেটে এক মাত্রা করে পনেরো দিন সেবন করবে। এভাবে প্রসবের পূর্ব পর্যন্ত ক্রমবর্ধমান শক্তিতে সালফার সেবন করতে হবে। প্রত্যেক মাত্রা সেবনের আগে ঔষধের জলীয় দ্রাবণ ভাল করে ১০/১২ বার ঝাঁকি দিতে হবে। 

গর্ভবতীর যদি সুনির্দিষ্ট কোনো ঔষধ আবশ্যক না হয় তাহলে এরূপ চিকিৎসা অবশ্যই সুস্থ সন্তান লাভের জন্য সহায়ক হবে। কিন্তু গর্ভবতী কোনো রোগ দ্বারা আক্রান্ত হলে তাকে যথাযথ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা দিতে হবে।

তথ্যসূত্রঃ- চিরোরোগের কারণ তাহাদের বৈশিষ্ট্য এবং তাহাদের চিকিৎসা। 

আলোচনা নোট ও প্রচারে -

ডা. এম আল-মামুন  

ডিএইচএমএস, ঢাকা।

Next Post Previous Post