দাঁতের সংজ্ঞা ও শ্রেণিবিভাগ

 মেরুদণ্ডী প্রাণীদের মুখে অবস্থিত একটি অঙ্গ হলো দাঁত। এটি খাদ্য চর্বণ ও কর্তনের (কাটা) কাজে ব্যবহৃত হয়। অধিকাংশ প্রাণীর দেহে দাঁতই হচ্ছে কঠিনতম অঙ্গ। 

দাঁত (Tooth) : মানবদেহের সবচেয়ে শক্ত আংশ দাঁত। খাদ্যদ্রব্য মুখগহ্বরে দাঁতের সাহায্যে চিবানো হয়। প্রথমত চিবানোর ফলে খাদ্যবস্তুু ছোট ছোট টুকরায় পরিনত হয়। পাকস্থলী এবং অন্ত্রের মধ্যে এই টুকরা খাদ্যবস্তুু গুলো মন্ডে পরিনত হয়। প্রাপ্ত বয়স্কদের মুখগহ্বরে উপরের ও নিচের চোয়ালে সাধারণ  16 টি করে মোট 32 টি দাঁত থাকে। মানবদেহে দাঁত দুই বার গজায়। প্রথমবার  শিশুকালে যা দুধদাঁত নামে পরিচিত, দুধদাঁত পড়ে গিয়ে ৭ থেকে ৮ বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বার স্থায়ী দাঁত গজায়।

 

মানুষের স্থায়ী দাঁত চার ধরনের। যথা :

১। কর্তন দাঁত (Incisor) - কর্তন দাঁত দিয়ে খাবার কেটে টুকরা করা হয়। 

২। ছেদন দাঁত (Canine) - ছেদন দাঁত দিয়ে খাবার ছেড়া হয়। 

৩। অগ্রপেষন দাঁত ( Premolar) - অগ্রপেষন দাঁত দিয়ে চর্বন, পেষন উভয় কাজ করা হয়। 

৪। পেষন দাঁত (Molar) - পেষন দাঁত দিয়ে খাদ্যবস্তুু পেষন করা হয়। 

মাড়ির সবচেয়ে পেছনের বা শেষের দাঁত দুটোকে আক্কেল দাঁত বলা হয়। প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক  মানুষের ৮ টি কর্তন দাঁত, ৪ টি ছেদন দাঁত, ৮ টি অগ্রপেষন দাঁত, ৮ টি পেষন দাঁত এবং ০-৪ টি আক্কেল দাঁত থাকে।

 

দাঁতের গঠন : 

প্রতিটি দাঁতের তিনটি অংশ থাকে। যথা:-

১। মুকুল - মাড়ির উপরের অংশ, 

২। মূল - মাড়ির ভিতরের অংশ, 

৩। গ্রীবা - দাঁতের মধ্যেবর্তী অংশ।


প্রতিটি দাঁত যেসব অংশ দিয়ে গঠিত তা হলো :

১। ডেন্টিন ( Dentine) - দাঁত প্রধানত ডেন্টিন নামক শক্ত উপাদান দিয়ে গঠিত। 

২। এনামেল ( Enamel) - দাঁতের মুকুল অংশে ডেন্টিনের উপরিভাগে এনামেল নামক কঠিন উপাদান থাকে। যা ক্যালসিয়াম ফসফেট, ক্যালসিয়াম কর্বনেট এবং ফ্লোরাইড দিয়ে তৈরি। 

৩। দন্ত মজ্জা (Pulp) - ডেন্টিনের ভিতরের ফাঁপা নরম অংশকে দন্ত মজ্জা বলে। দন্ত মজ্জার মাধ্যমে  ডেন্টিন অংশে পুষ্টি ও অক্সিজেন সরবরাহ করে। 

৪। সিমেন্ট ( Cement) - সিমেন্ট নামক পাতলা আবরণ দাঁতের মূল অংশ ডেন্টিনকে আবৃত করে রাখে। এই সিমেন্টের সাহায্যে দাঁত মাড়ির সাথে আটকে  থাকে। 


লেখক :

সাথী রায় 

ডিএইচএমএস (কন্ট)

পটুয়াখালী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।

Next Post Previous Post