আত্মহত্যা প্রবণতা ও হোমিওপ্যাথি প্রতিকার
আত্নহত্যার ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটে ৮০ থেকে ৮২ বছর বয়সের বৃদ্ধদের মাঝে (কনওয়েল জরিপ ১৯৯৪)।আমেরিকান শ্বেতাঙ্গ মহিলাদের মাঝে আত্মহত্যার হার সবচেয়ে বেশি হলো ৫০ বছর বয়সের আগে। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় পুরুষদের আত্মহত্যার হার মহিলাদের চেয়ে বেশি।
বৃদ্ধ লোকেরা আত্মহত্যার ইচ্ছার কথা অন্যের কাছে যুবক যুবতীদের চেয়ে কম প্রকাশ করে, গোপনে চেষ্টা চালিয়ে সফল হয়। বৃদ্ধ লোকেরা যখন বাঁচার অর্থ খুঁজে পায়না তখন বিভিন্ন উপায়ে তারা নিজেদের উপরে প্রতিশোধ নেয়। যেমন তারা ঠিকমতো খায় না, ওষুধ সেবন করে না, কাউকে কিছু বলে না, এবং তিলে তিলে নিজেকে ক্ষয় করে ফেলে।
বাটলার এবং লেউইস ১৯৮২ গবেষণায় দেখিয়েছেন যে, বৃদ্ব লোকেরা যখন আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয় তখন তা অনেক যুক্তি বা একটি দর্শনের উপর ভিত্তি করে গ্রহণ করে কিন্তু যুবক যুবতীদের আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত অতটা যৌক্তিক বা দার্শনিক ভিত্তির উপরে নির্ভর করে না।
আত্মহত্যার প্রবণতা প্রতিরোধের জন্য যে সমস্ত কৌশল অবলম্বন করা যায় তা হলো-
*যেসব ব্যক্তি বিষন্নতা, সিজোফ্রেনিয়া, মাদকাসক্তি ব্যক্তিত্বের বিকৃতিতে ভোগেন তাদের সেনাক্ত করে চিকিৎসা দিতে হবে।
* যারা ইতিপূর্বে আত্মহত্যার চেষ্টা করে ব্যথ' হয়েছেন বা যারা আত্মহত্যা করবে হুমকিদেয় তাদের সেনাক্ত করে সর্বক্ষণ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে রাখতে হবে।
*এডুইন স্নেইউম্যানের কৌশল অবলম্বন যেমন, (ক)ব্যক্তির তীব্র মনোবেদনা ও কষ্ট লাঘব করতে হবে। (খ) আত্মহননের উদ্যত ব্যক্তিকে মনের জানালা
খুলে অব্যাহত কষ্ট নৈরাজ্য ছেড়ে বিকল্প পথে উৎসাহ দিতে হবে। (গ) ব্যক্তিকে আত্মহননের পথ থেকে সরে আসার জন্য কাউন্সিলিং ও উৎসাহ দিতে হবে।
হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক দীর্ঘ ১২ বছর গবেষণা করে আত্মহত্যা প্রবন লোকদের মাঝে অবদমিত সিফিলিস দোষের সন্ধান পেয়েছেন। সিফিলিস যখন সঠিক চিকিৎসা না হয়ে অবদমন প্রাপ্ত হয় তখন মানবদেহে একটা দোষের সৃষ্টি করে যাকে হ্যানিম্যান সিফিলিটিক মায়াজম নামকরণ করেছেন।
হোমিওপ্যাথি মেটেরিয়া মেডিকাতে অনেক এন্টিসিফিলিটিক মেডিসিন রয়েছে। লক্ষ্মণসাদৃশ্যে
যথাযত শক্তিকৃত ওষুধ অরগ্যানন অব মেডিসিন অথবা অভিজ্ঞ চিকিৎসকের তত্বাবধানে চিকিৎসা সেবা পরিচালিত হলে আত্মহত্যা প্রবনতা প্রতিরোধ হবে।
নিম্নে আত্মহত্যা-প্রবণতা প্রতিরোধক কয়েকটা ওষুধের নাম দেওয়া হল
অরাম মেট, অরাম মিউর, অরাম মিউর নেট, অ্যালুমিনা, আর্সেনিক, কেলি ব্রোম, নেট্রাম সালফসো রিনাম, স্ট্রামোনিয়াম, মারকুরিয়াস সল, সিপিয়া, প্লামবাম মেট ইত্যাদি।
শুভেচ্ছান্তে :
হোমিওপ্যাথি মেডিসিন কনসালটেন্ট।
সোনাগাজী, ফেনী।