অন্যের সমালোচনায় নিজেকে আটকে রাখলে চলবে না

 আমরা প্রায়ই মানুষের কথায় প্ররোচিত হই এবং আমাদের নিজেদের কার্যকলাপ কে নিজেদের কাছেই প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলি। আমাদের যেকোন উদ্যোগের পথে অনেক বাঁধা আসবে। সাথে থাকবে নানা মানুষের নানা ধরণের সমালোচনা ও কটু বক্তব্য। কিন্তু তাতে কেবল চিন্তা করে ও সেগুলোর মাঝে নিজেকে আটকে রেখে পিছিয়ে পড়লে চলবে না। সবার উপরে অগ্রাধিকার দিতে হবে নিজের উদ্দেশ্য এবং উদ্যোগকে। তার সামনে যে বাঁধাই আসুক না কেন তাকে পিছনে রেখে এগিয়ে যাওয়ার জন্যে একাগ্র হতে হবে।

চলুন এবার আমরা তিনটি ঘটনা শুনি এবং নিজেদের জন্য করনীয় দিক ঠিক করি :

প্রথম ঘটনা -

উচ্চ বেতনে চাকুরি করা এক যুবক আরেক গরীব যুবককে

প্রশ্ন করলো,

- তুমি কোথায় চাকুরি করো?

- একটা ম্যাচ ফ্যাক্টরিতে।

- স্যালারি কতো?

- ৫০০০।

- মোটে পাঁচ হাজার? চলো কিভাবে? তোমার মালিক

তোমার প্রতি অবিচার করছে। তোমার যা যোগ্যতা,

হেসেখেলেই তুমি অনেক টাকা বেতন পেতে পারো।

যুবকের মেজাজ খাট্টা হয়ে গেলো। নিজের কাজের

প্রতি, বসের প্রতি বেজায় রুষ্ট হয়ে উঠলো। পরদিন গিয়ে

সরাসরি বসকে জুলুমের কথা জানালো। কথা কাটাকাটি

হওয়াতে বস তাকে চাকরিচ্যুত করলো।

এখন যুবকটি বেকার।

দ্বিতীয় একটি -

- তোমার প্রথম সন্তান হলো বুঝি?

- জ্বি।

- তোমার স্বামী এ উপলক্ষ্যে তোমাকে কিছু দেয় নি?

উপহার বা এ জাতীয় কিছু?

- না। কেন দিবে? এ তো আমাদেরই সন্তান! 

টাকা দিতে হবে কেন?

- কেন তোমাকে হাত খরচার জন্যেও তো দু’চার পয়সা

দিতে পারে। তার কাছে তোমার কোনও মূল্য নেই? 

তুমি চাকরানি?

.

স্ত্রীর মনে ধরলো কথাটা। সারাদিন কথাটা ভাবতে

ভাবতে মনটা বিষিয়ে উঠলো। সত্যিই তো! আমাকে

একটা টাকাও কখনো ছোঁয়ায় না! রাতে কর্মক্লান্ত স্বামী

ঘরে ফিরলো। স্ত্রীর মুখ দিয়ে বোমা বিস্ফোরিত হলো।

লেগে গেলো দু’জনে। কথা কাটাকাটি। ঝগড়া।

হাতাহাতি। শেষ পর্যন্ত তালাকে গিয়ে গড়াল।

তৃতীয় সমাচার -

- এই বৃদ্ধ বয়েসে কষ্ট করছেন? ছেলে ঢাকায় থাকে, বড়

চাকুরি করে শুনেছি। বউ-বাচ্চা নিয়ে থাকে। আপনাদের

দু’জনকে নিয়ে যেতে পারে না? আপনাদের দেখতেও

তো

আসে না!

- না না, ছেলে আমার খুবই ব্যস্ত। টাকা পাঠায় তো।

ফোনে খোঁজ-খবর নেয়। নিয়মিত।

- কী এমন ব্যস্ততা তার শুনি? নিজের জন্মদাতা-দাত্রী

কে দেখতে আসার সময় হয় না?

- সারাদিন অফিস-বাসা করতে করতেই সময় চলে যায়!

- আপনি খোঁজ নিয়েছেন? সে ঢাকায় বাড়ি-গাড়ি

হাঁকিয়ে বেড়াচ্ছে। আর আর আপনারা অজপাড়াগাঁয়ে

ধুঁকছেন?

.

বৃদ্ধ বাবা বাসায় এসে স্ত্রীকে খুলে বললো। স্ত্রীও

বাধা দিল,

- আপনি ভুল শুনেছেন। সে আসলেই ব্যস্ত।

- নাহ, খন্দকার সাহেব কি মিথ্যা বলতে পারেন? ...আহা

রে! কাকে বুকের রক্ত পানি করে বড় করলাম?

কিছু "নিরীহ" প্রশ্ন আমাদের সুখী জীবনকে এক লহমায়

দুঃখী করে দিতে সক্ষম। ছদ্মবেশী দরদীরা নিস্তরঙ্গ

শান্ত জীবনে অশান্তির দাবানল জ্বালিয়ে দেয়...

- কেন? সেটা এখনো কিনেন নি?

- আপনাদের এখনো বাচ্চাকাচ্চা হয় নি?

- এই জীবন কিভাবে বহন করে চলেছেন?

- ছেলেকে বিশ্বাস করে বসে আছেন?

- ছেলে তো বউয়ের কেনা গোলামে পরিণত হয়েছে!

.(সংগৃহীত পোস্ট) 

গল্পের নির্যাসঃ

= ফাসাদ সৃস্টিকারী হয়ো না।

= হিংসুকদের ছলনায় পড়ো না।

.

গল্পের হিতোপদেশঃ

= মানুষের ঘরে অন্ধ হয়ে প্রবেশ করো। বোবা হয়ে বের

হয়ে আসো...

Next Post Previous Post