মহিলাদের পিরিয়ডের যন্ত্রণা উপশম করছে তিন হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন

 পিরিয়ড বা ঋতুস্রাবের সময়ে তীব্র যন্ত্রণায় ভোগেন শতকরা ৯০ শতাংশ মেহিলা। অফিস, স্কুল-কলেজ থেকে দৈনন্দিন কাজ— সবই ব্যাহত হয়। জোর করে কাজ করলেও, এই ব্যথার জন্য বিরক্তি ও অস্বস্তিবোধ কাজ করে। কমে যায় কর্মদক্ষতাও। 

দেখা গিয়েছে, প্রতি চারজন ঋতুমতীর মধ্যে একজনের ক্ষেত্রে এই ব্যথা অসহনীয় জায়গায় পৌঁছয়। ১৩ থেকে ৫১ শতাংশ মহিলা ওই চারদিন রোজকার জীবনযাপন অন্যদিনগুলির তুলনায় গুটিয়ে নিতে বাধ্য হন। ব্যথার ঠেলায় প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খাওয়ার বদভ্যাস করে ফেলেন অনেকে। এমনই এক অসহনীয় পরিস্থিতিতে আশার আলো দেখাল হোমিওপ্যাথি। এই ধরনের ব্যথা উপশমে ন্যাট্রাম মিউর, ক্যালকেরিয়া কার্ব এবং পালসেটিলা— এই তিন ঔষধ যথেষ্ট কার্যকর হচ্ছে বলে উল্লেখ করেছেন, গবেষকরা। 

দেশে এই প্রথম এ বিষয়ে বাঙালি চিকিৎসকদের উল্লেখযোগ্য গবেষণা ঠাঁই পেল আন্তর্জাতিক পত্রিকা জার্নাল অব কমপ্লিমেন্টারি ইনটিগ্রেটেড মেডিসিন (ডি গ্রুটার)। 

শুধু তাই নয়, দেশে হোমিওপ্যাধিক সর্ববৃহৎ সম্মেলন এলএমএইচআই-এ সেরা গবেষণাপত্রের (পোস্টার প্রেজেন্টেশনের) সম্মানও পেল এই কাজ। 

সূত্রের খবর, মহেশ ভট্টাচার্য হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজের প্যাথোলজি বিভাগের তৎকালীন প্রধান ডাঃ শুভময় ঘোষের নেতৃত্বে এই গবেষণা হয়। ২০১৮ থেকে ২০২০– এই তিন বছর ধরে চলে সমীক্ষা। ১৩ ৪৫ বয়সিদের মধ্যে গবেষণা চালান। 

প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর ডাঃ ঘোষ সহ হাজন সরকারি চিকিৎসক গবেষক। অংশগ্রহণকারী ১২৮ জনকে দুটি গোষ্ঠীতে ভাগ করে চলে গবেষণা। একদিকে রাখা হয় হোমিওপ্যাথিক ওষুধ পাবেন না এমন মহিলাদের। অন্যভাগে যাঁরা ওষুধ পাচ্ছেন, রাখা হয় তাঁদের।

ফলাফল? গবেষক ডাঃ শুভ্রনীল সাহা ও ডাঃ খুশবু রাই বলেন, আমরা দেখেছি, এই তিন হোমিওপ্যাথিক ওষুধ খাওয়া অংশ গ্রহণকারীদের ক্ষেত্রে অন্তত ৩৫ শতাংশ ব্যথার উপশম হয়েছে। সার্বিকভাবে তাঁরা পিরিয়ডের চারদিন তুলনায় কম অস্বস্তি ভোগ করেছেন। 

ডাঃ ঘোষ বলেন, চিকিৎসা গবেষণায় বিশ্বের অন্যতম উল্লেখযোগ্য 'পাবমেড' আমাদের কাজকে স্বীকৃতি দিয়েছে। আমরা কাজটি করেছি মূলত প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়ার ব্যথা নিয়ে। পিরিয়ডের সময় আরও এক ধরনের যন্ত্রণা হয়, যা আদতে টিউমার, সিস্ট বা অন্য কোনও সমস্যা বা রোগের উপসর্গ। সেই নিয়েও আমাদের কাজ করার ইচ্ছা রয়েছে।

বিশ্বজিৎ দাস - কলকাতা 
মহিলাদের পিরিয়ডের যন্ত্রণা উপশম করছে তিন হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন (ভারতের বাঙালি চিকিৎসকদের গবেষণা, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গবেষণা জার্নালে প্রকাশিত)। 

গবেষণা সংবাদ প্রকাশিত : বর্তমান পত্রিকা, কলকাতা, ভারত (০৬ আগষ্ট ২০২২ খ্রিষ্টাব্দ)।


Next Post Previous Post