হোমিওপ্যাথি’র প্রসারে সরকারি পৃষ্টপোষকতা’য় ব্যাপক প্রচারণা জরুরি
![]() |
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার সফলতা বিষয়ে সরকারি পৃষ্টপোষকতা ও ব্যাপক প্রচারণা জরুরি। |
বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার ৪০ ভাগ জনগণ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা গ্রহন করে আসছে। যা বাংলাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় "আশা ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ" ও বিবিসি (বাংলা) এর যৌথ গবেষণা প্রতিবেদন ২০১৫ প্রকাশিত হয়েছে। আর বাংলাদেশে জেলা-উপজেলা তথা মাঠ পর্যায়ে বিপুল জনগোষ্ঠীকে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা সেবা প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে তথা রেখে আসছে বাংলাদেশ সরকার এর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ড যৌথভাবে স্বীকৃত বাংলাদেশের জেলা ও উপজেলায় স্থাপিত সকল হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ হতে ডিএইচএমএস (হোমিওপ্যাথি) পাসকৃত সর্ব বৃহৎ সংখ্যক মাঠ পর্যায়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকবৃন্দ।
বাংলাদেশে কয়েক লাখ ডিএইচএমএস (হোমিওপ্যাথি) পাস রয়েছে, তার মধ্যে প্রায় ৫০ হাজার ডিএইচএমএস (হোমিওপ্যাথি) পাসকৃত রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক রয়েছেন। বাংলাদেশে মাঠ পর্যায়ে ব্যক্তিগত পর্যায়ে হোমিওপ্যাথি চেম্বার ও রোগীদের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা প্রদান করা ডিএইচএমএস (হোমিওপ্যাথি) পাসকৃত চিকিৎসকদের দ্বারা স্বাস্থ্য সেবায় হোমিওপ্যাথিক অর্জন সম্ভব হয়েছে। এখানে বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ড বা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তেমন কোন কৃতিত্ব নেই। যেখানে সুযোগ থাকলেও অদৃশ কারণে সরকার স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশে কোন ডিএইচএমএস হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসককে সরকারি কর্মসংস্থান দিতে পারেনি, ডিএইচএমএস পাসকৃতদের উচ্চ শিক্ষার জন্য নেই সরকারি বা বেসরকারিভাবে কোন হোমিওপ্যাথি বিশ্ববিদ্যালয়, নেই কোন গবেষণার সুযোগ, নেই হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কাউন্সিল। সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এর বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ড স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ড যৌথভাবে স্বীকৃতি প্রাপ্ত দেশের হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ হতে ডিএইচএমএস (হোমিওপ্যাথি) পাসকৃতদেরকে ডিএইচএমএস (হোমিওপ্যাথি) পাসের সরকারি সার্টিফিকেট প্রদান করে দায়সারছে!
১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এর স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ এর স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর এর অধিনে রাষ্ট্রীয় বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ড প্রতিষ্ঠা হয়। বাংলাদেশে সরকার স্বীকৃত হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ রয়েছে। সরকার স্বীকৃত আন্তর্জাতিক পর্যায়ের হোমিওপ্যাথি কোর্স ২টি হলো ডিএইচএমএস ও বিএইচএমএস। রাষ্ট্রীয় বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ডের অধিনে অনুমোদনপ্রাপ্ত প্রায় ৬৫টি ডিপ্লোমা হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ রয়েছে। বাংলাদেশে একমাত্র বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ডের অধিনে সরকার ও বোর্ড স্বীকৃত হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজে ডিএইচএমএস কোর্স পরিচালিত হয়। বাংলাদেশের সকল জেলা-উপজেলায় বিপুল সংখ্যক রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথ চিকিৎসক ও চেম্বার যেমন আছে, তেমনি বিপুল পরিমান হোমিওপ্যাথিক ঔষধের ফার্মেসী আছে।
বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এর স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ এর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর অল্টারনেটিভ মেডিকেল কেয়ার (এএমসি) কর্তৃক শুধুমাত্র একতরফাভাবে বিএইচএমএস (হোমিওপ্যাথি) পাসকৃত হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের নিয়ে নির্মিত হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা নিতে সচেতনতামূলক প্রচারিত বিজ্ঞাপন। যেখানে দেশে এ যাবত মাত্র প্রায় ২ হাজার বিএইচএমএস (হোমিওপ্যাথি) পাসকৃত রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক রয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এর স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ এর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর অল্টারনেটিভ মেডিকেল কেয়ার (এএমসি) প্রতিষ্ঠা হয়েছে বিএইচএমএস (হোমিওপ্যাথি), ডিএইচএমএস (হোমিওপ্যাথি), বিইউএমএস (ইউনানী), ডিইউএমএস (ইউনানী), বিএএমএস (আযুর্বেদিক), ডিএএমএস (আয়ুর্বেদিক) পাসকৃত চিকিৎসকদের সরকারি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও জেলা সদর হাসপাতাল এবং মেডিকেল কলেজ/কলেজ হাসপাতাল গুলোতে সরকারি কর্মসংস্থান ব্যবস্থা করা, অধিকার, মর্যাদা, সুযোগসুবিধা, চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রচার-প্রচারনা, জনগণের দ্বারপ্রান্তে চিকিৎসা ব্যবস্থা পৌঁছানো প্রভৃতি কার্যক্রম করার, কিন্তু অল্টারনেটিভ মেডিকেল কেয়ার (এএমসি) মধ্যে তা পরিলক্ষিত হচ্ছেনা কেন? কেন জবাবদিহিতার আওতায় আসছেনা? স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর হোমিও ও দেশজ বিভাগ এর কাজ ও কার্যক্রম কি? কাজ বা কার্যক্রম পরিলক্ষিত হচ্ছেনা কেন? কেন জবাবদিহিতার আওতায় আসছেনা? সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ গ্রহন করা দরকার। পাশাপাশি জনগণ ও ডিএইচএমএস (হোমিওপ্যাথি) চিকিৎসক এবং মিডিয়া সোচ্চার হওয়া দরকার। বিশ্বব্যাপী প্রায় ২ শত বছর যাবত হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা তার রোগী আরোগ্যের বিশাল সফলতা দিয়ে লড়াই করে টিকে আছে, আর অপর দিকে বাংলাদেশে প্রায় ৫০ বছর/অর্ধ শতাব্দী/৫ দশক যাবত শোষিত-বঞ্চিত ডিএইচএমএস হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকগণ লড়াই-সংগ্রাম করেই দাবি ও অধিকার আদায়ে সোচ্চার।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ড যৌথভাবে স্বীকৃত বাংলাদেশে ৬৫টি ডিএইচএমএস (হোমিওপ্যাথি) কোর্সের হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ এবং প্রায় ৫০ হাজার ডিএইচএমএস (হোমিওপ্যাথি) পাসকৃত মাঠ পর্যায়ে রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এর বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ড কর্তৃক ডিএইচএমএস (হোমিওপ্যাথি) পাসকৃত রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের নিয়ে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা নিতে সচেতনতামূলক বিজ্ঞাপন কেন নির্মিত ও প্রচারিত হচ্ছেনা? লজ্জাজনক। যা কাম্য নয়। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এর বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ড ও বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ড পরিচালনা কমিটির কার্যক্রম তথা ভূমিকা প্রশ্নের সম্মুখীন!
ওয়েবসাইড :
বাংলাদেশ সরকার এর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এর বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ড ওয়েবসাইট www.homoeopathicboardbd.org বোর্ডের এ ওয়েবসাইট ও ঠিকানাও বেসরকারি। ওয়েবসাইট ঠিকানায় gov.bd লেখা নেই, লেখা আছে org সমূহ, যা বেসরকারি সংস্থা বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ওয়েবসাইটের এধরনের ঠিকানা ব্যবহার করে থাকে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এর বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ডকে সরকারি ওয়েবসাইটের ঠিকানার জন্য আবেদন করা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এর বাংলাদেশ ইউনানী ও আয়ুবের্দিক বোর্ডও সরকারিভাবে পাওয়া সরকারি ওয়েবসাইটে ঠিকানা ব্যবহার করে আসছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এর বাংলাদেশ ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক বোর্ড এর সরকারি ওয়েবসাইট : (www.bbuasm.gov.bd/)
আর অপরদিকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এর বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ড (প্রতিষ্ঠা : ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দ) নিজেদের ওয়েবসাইট (www.homoeopathicboardbd.org)
(তথ্যসূত্র/নথি ও মতামত)
==========================
লেখক পরিচিতি :
ডিএইচএমএস (রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ)
এমএসএস (সরকার ও রাজনীতি বিভাগ) এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ।
২২ জুলাই ২০২২ খ্রিষ্টাব্দ।