ডাঃ হ্যানিম্যানের চিকিৎসা দর্শনের মূলমন্ত্র
নিউটনের মাধ্যাকর্ষণ শক্তি আবিষ্কারের ন্যায় মহাত্মা হ্যানিম্যান ও তাঁহার চিন্তাশক্তি ও দর্শন দ্বারা "Similia Similibus Curentur" পদ্ধতি আবিষ্কার করেন । এই দর্শন পৃথিবীর অন্য কোন দার্শনিক, বৈজ্ঞানিক বা চিকিৎসকের মধ্যে দেখা যায় না। তাঁহার আবিষ্কৃত চিকিৎসা শাস্ত্রের নাম হোমিওপ্যাথি। তাঁহার চিকিৎসা দর্শনের মূলনীতি ও বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ।
i) প্রাকৃতিক রোগ শক্তি সূক্ষ্ম ও অজড়। ইহা প্রকৃতি প্রদত্ত একটি অশুভ শক্তি।
ii) মানবদেহের অভ্যন্তরে এক অজড় অমূর্ত্ত আত্মিক জীবনীশক্তি বিরাজমান । এই শক্তি মানবদেহের প্রতি অঙ্গে, প্রতি কোষে সমানভাবে গরিব্যপ্ত থাকিয়া দেহের প্রতিটি যন্ত্রকে স্বীয় কার্য সম্পাদনে নিয়োজিত রাখে। সদৃশ অজড় এই জীবনী শক্তিই বিশৃংখলা প্রাপ্ত হয় বা অসুস্থ হয়।
iii) প্রাকৃতিক আরোগ্যনীতি Similia Similibus Curenter অনুসারে রোগী ও ঔষধের সাদৃশ্য লক্ষণ অনুযায়ী প্রকৃত আরোগ্য সাধিত হয় ।
iv) সুস্থদেহে যে ঔষধ রোগ সৃষ্টি করিতে পারে, ঐ ঔষধেরই রোগ নিরাময়ের ক্ষমতা আছে।
v) সদৃশ লক্ষণাযায়ী একবারে একটিমাত্র ঔষধ প্রয়োগ করিতে হইবে।
vi) সূক্ষ্মমাত্রার শক্তিকৃত ঔষধই সূক্ষ্ম রোগশক্তি দূরীকরণের উপযুক্ত অস্ত্র।
vii) রোগের আক্রমণে কোন বিশেষ অঙ্গ নয়, গোট জীবনীশক্তি অসুস্থ হয়। তাই চিকিৎসা আঙ্গিকভাবে নয়, সামগ্রিকভাবেই করিতে হইবে ।
ix) ক্ষুদ্র মাত্রার ঔষধ প্রয়োগ করিয়া চিকিৎসা করিতে হইবে।
x) যেহেতু মানবদেহে মিশ্র ঔষধের প্রকৃত ক্রিয়া অজ্ঞাত সেহেতু একবারে একাধিক ঔষধ প্রয়োগ করা যাইবে না।
(xi) রোগীর ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য এবং ঔষধের সত্ত্বাস্বাতন্ত্র্য হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা দর্শনের একটি বিশেষ দিক।