মানিকগঞ্জ ও উত্তরবঙ্গে হবে ৪০০ টন সক্ষমতার দুটি অক্সিজেন প্ল্যান্ট : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

জনসন অ্যান্ড জনসনের আয়োজনে দক্ষতা উন্নয়ন কর্মশালায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী। ছবি: সংগ্রহকৃত 

 দেশে দৈনিক ২০০ টন তরল অক্সিজেনের চাহিদা থাকলেও উৎপাদন সক্ষমতা অনেক কম। অক্সিজেনের চাহিদা পূরণে এবং দেশের চিকিৎসা খাতকে আরও এগিয়ে নিতে নতুন দুটি তরল অক্সিজেন প্ল্যান্ট স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। খুব শিগগিরই কাজ শুরু হবে। প্রতিটির উৎপাদন সক্ষমতা হবে ৪০০ টন। 

শনিবার (২৩ জুলাই) দুপরে সদর উপজেলার দিঘি এলাকার মানিকগঞ্জ কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের ইন্টার্ন সার্জারি চিকিৎসকদের বেসিক সার্জিক্যাল স্কিল সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। 

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্ল্যান্ট দুটি নির্মাণে সরকারের খরচ হবে কয়েকশ কোটি টাকার ওপরে। দেশে অক্সিজেনের উৎপাদন দ্বিগুণ হয়ে যাবে। অক্সিজেনের অভাব এই দেশে আর থাকবে না। এসব প্ল্যান্টের একটি হবে মানিকগঞ্জে আর অন্যটি স্থাপন করা হবে উত্তরবঙ্গের যে কোনো এক জেলায়।’ 

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আগে দেশে ৭ থেকে ৮ টির মতো মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল ছিল। কিন্তু এখন আমাদের দেশে ৩৮ টির মতো মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল রয়েছে। এক সময় এই দেশে একটিও ইনস্টিটিউট ছিল না কিন্তু এখন কিডনি ইনস্টিটিউট, আই ইনস্টিটিউট, বার্ন ইনস্টিটিউট ও ক্যানসার ইনস্টিটিউটসহ ১৫ থেকে ২০টি চিকিৎসা ইনস্টিটিউট হয়েছে। যেগুলো বড় বড় হাসপাতাল এবং প্রশিক্ষণের জায়গা হিসেবে পরিচিত। এগুলো আগে একটিও ছিল না। শেখ হাসিনার নির্দেশনায় মানুষের প্রয়োজনে এগুলো করা হয়েছে।’ 

দেশে এখন ওষুধের অভাব নেই উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চাহিদার একশ পার্সেন্ট ওষুধ বাংলাদেশে তৈরি হয়। আমাদের দেশে তৈরি করা বিশ্বমানের নামীদামি ওষুধ এখন বিদেশে সুনামের সঙ্গে রপ্তানি করা হচ্ছে। একটি জিনিসের ঘাটতি আমরা এখনো পূরণ করতে পারিনি। তা হলো হাসপাতালের প্রশিক্ষিত জনবল, প্রশিক্ষিত ডাক্তার, প্রশিক্ষিত নার্স ও প্রশিক্ষিত টেকনিশিয়ান। সেই দিকে নজর দিয়ে আজকের এই প্রশিক্ষণ কর্মশালা।’ 

মন্ত্রী জাহিদ মালেকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, হাসপাতালগুলোতে এই মুহূর্তে ৬০ হাজার বেড আছে। সম্প্রতি ১৫ হাজার ডাক্তার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নতুন করে নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ২০ হাজার। যা আগের চেয়ে দ্বিগুণ। সরকার এখন গুণগত মান উন্নয়নের চেষ্টা করছে বলে জানান মন্ত্রী। 

কোভিড টিকা দান কর্মসূচি প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভ্যাকসিন আমরা প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ ৭৫ থেকে ৮০ পার্সেন্ট দিয়েছি। কিন্তু বুস্টার ডোজ বেশি দিতে পারছি না। এখন পর্যন্ত দেশে মাত্র ৩ কোটি লোক বুস্টার ডোজ নিয়েছে। অথচ প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছে ১৩ কোটি লোক। প্রতিনিয়ত বুস্টার ডোজ নেওয়ার ক্যাম্পেইন করছি। বুস্টার ডোজের দোকান খুলে বসে আছি। যে দোকানে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। কিন্তু ক্রেতা দোকানে আসে না!’ 

বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান জনসন অ্যান্ড জনসনের আয়োজনে মানিকগঞ্জ কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মোট ৩৮ জন ইন্টার্ন সার্জারি চিকিৎসকের বেসিক সার্জিক্যাল স্কিল বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। 

কর্মশালায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) প্রফেসর ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঢাকা ডিভিশনের পরিচালক ডা. ফরিদ উদ্দিন, কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. বজলুল করিম চৌধুরী, কলেজের অধ্যক্ষ ডা. জাকির হোসেন, ঢাকার মুগদা মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডা. এবিএম জামাল, জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ, পুলিশ সুপার গোলাম আজাদ খান, পৌর মেয়র রমজান আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

অনুষ্ঠান শেষে কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের ৩৮ জন ইন্টার্ন সার্জারি চিকিৎসকের হাতে সনদপত্র তুলে দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও অতিথিরা।

Next Post Previous Post