মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে ব্ল্যাকহোলের ছবির সন্ধান মিলেছে
আমরা সৌরজগতবাসী যে গ্যালাক্সি বা ছায়াপথের সদস্য, তার নাম ‘মিল্কি ওয়ে’। এই ‘মিল্কি ওয়ে’ গ্যালাক্সিতে ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণগহ্বরের উপস্থিতির কথা জানাই ছিল বিজ্ঞানীদের। এ নিয়ে গবেষণা করে ২০২০ সালে নোবেল পুরস্কারও জিতেছেন তিন পদার্থবিজ্ঞানী।
কিন্তু, ‘মিল্কি ওয়ে’র কেন্দ্রে থাকা কৃষ্ণগহ্বরের কোনো ছবি এত দিন পাওয়া যায়নি। গতকাল বৃহস্পতিবার সে ‘দৈত্যের’ ছবি প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা। তবে, এ দৈত্য আমাদের জন্য বিপজ্জনক নয় বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
‘ইভেন্ট হরাইজন টেলিস্কোপ’ প্রজেক্টে আকাশগঙ্গার এ কৃষ্ণগহ্বরের ছবি ধরা পড়েছে। এ কৃষ্ণগহ্বরের পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্যাজিট্যারিয়াস-এ*’।
মহাকাশ বিজ্ঞানে কৃষ্ণগহ্বরের এ আবিষ্কারকে যুগান্তকারী বলে মনে করছেন অনেকে। এ গবেষণাটি ‘অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল লেটারস’ নামে পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়েছে।
কৃষ্ণগহ্বর কী?
আভিধানিক ব্যাখ্যায় কৃষ্ণগহ্বর হলো—তীব্র মহাকর্ষবলের প্রভাবে চুপসে যাওয়া জ্যোতিষ্কবিশেষ, যার কাছাকাছি কোনো জড়বস্তু আলোককণা ইত্যাদি আসামাত্র ওই নক্ষত্র তা গ্রাস করে নেয়; অর্থাৎ ওই জ্যোতিষ্ক থেকে কিছুই বেরিয়ে আসতে পারে না।
কৃষ্ণগহ্বর একটি মহাজাগতিক বস্তু, যার ভর অনেক বেশি। এ অধিক ভরের কারণে কৃষ্ণগহ্বরের মাধ্যাকর্ষণ শক্তি প্রচণ্ড এবং এর ফলে আলোও এর আকর্ষণ এড়িয়ে যেতে পারে না। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন—আকাশগঙ্গা ছায়াপথের কেন্দ্রে থাকা ‘স্যাজিট্যারিয়াস-এ*’ নামের কৃষ্ণগহ্বরের ভর সূর্যের প্রায় ৪০ লাখ গুণ বেশি। সৌভাগ্যবশত, দৈত্যাকার এ কৃষ্ণগহ্বরটির অবস্থান সৌরজগত থেকে প্রায় ২৬ হাজার আলোকবর্ষ দূরে (আলো প্রতি সেকেন্ডে তিন লাখ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করে। এভাবে এক বছরে আলো যে দূরত্ব অতিক্রম করে, তা-ই এক আলোকবর্ষ)। যে কারণে এ থেকে আমাদের বিপদের শঙ্কা নেই বলে বিবিসি জানিয়েছে।
কয়েক বছর আগে অন্য একটি ছায়াপথের কৃষ্ণগহ্বরের ছবি পেয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা।