১৩০০ কোটি বছর আগের মহাবিশ্বের ছবি

 এবার পাওয়া গেলো ১ হাজার ৩০০ কোটি বছর আগের মহাবিশ্বের ছবি। তাও আবার ঝকঝকে রঙিন। এমন ছবি এই প্রথম প্রকাশ হলো।

মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার আলোচিত জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ দিয়ে এই ছবি ধারণ করা হয়। ছবিটি মহাবিশ্বের ছায়াপথগুলোর (গ্যালাক্সি) একটি অংশকে ধারণ করেছে। যাতে দেখা যাচ্ছে অসংখ্য তারার আলোর ঝলকানি।


পাঁচটি ছায়াপথের এই গুচ্ছটি একে অন্যের কাছাকাছি অবস্থান করছে। বিশাল এই নক্ষত্রপুঞ্জটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্টেফানস কুইনটেট’। জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ থেকে পাঠানো ছবিগুলোর মধ্যে এখন পর্যন্ত এটিই সবচেয়ে বড়। এটিতে ১৫০ মিলিয়নেরও বেশি পিক্সেল রয়েছে

পাথুরে পর্বতের মতো দেখতে এই ‘কসমিক ক্লিফস’ মূলত নক্ষত্রের মেঘে আচ্ছন্ন একটি নীহারিকার শেষ প্রান্ত। এর নাম ‘কারিনা নেবুলা’। জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের ইনফ্রারেড আলোতে ধারণ করা এটা। বাস্তবে এটি বিশালাকার বায়বীয় গহ্বরের প্রান্ত। এর সবচেয়ে উঁচু অংশ প্রায় সাত আলোকবর্ষ (এক আলোকবর্ষ সমান ৯.৪৬ ট্রিলিয়ন কিলোমিটার) উচ্চ।

পাশাপাশি দুটি ছবিতে দেখা এই নীহারিকার নাম ‘সাউদার্ন রিং নেবুলা’। বাম পাশের ছবিতে ‘নেয়ার ইনফ্রারেড লাইট’ এবং ডান পাশের ছবিতে ব্যবহার হয়েছে ‘মিড ইনফ্রারেড লাইট’। এর মাঝে থাকা নক্ষত্রটি হাজার হাজার বছর ধরে গ্যাস এবং ধূলিকণাকে সবদিকে ছড়িয়ে দিচ্ছে।

এই ছবিতে দেখা ‘এসএমএসিএস -৭২৩’ নামে এই ছায়পথ গুচ্ছ পৃথিবীর জন্মের আগের। বিশাল মহাবিশ্বে এটি একটি টুকরোর মতো।

জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের ছবিগুলো সোমবার (১১ জুলাই) হোয়াইট হাউজে প্রকাশ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

নাসা বলছে, জেমস ওয়েব বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী টেলিস্কোপ। যা ২০২১ সালের ২৫ ডিসেম্বর সফলভাবে মহাকাশে পাঠানো হয়। টেলিস্কোপটি হাবল টেলিস্কোপের উত্তরসূরি। যা অনেক শক্তিশালী। এটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে এক হাজার কোটি ডলার।
জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ
জেমস ওয়েবে তোলা ছবির ছায়াপথগুচ্ছ থেকে আলো এসে পৌঁছাতে ৪৬০ কোটি বছর লেগেছে। এত দূরের বস্তু ঝাপসা বা দেখার অযোগ্য থাকার কথা, কিন্তু এখানেই জেমস ওয়েবের বিশেষত্ব।

তবে টেলিস্কোপটি মহাকাশের যে অংশের ছবি তুলেছে সেটি মহাকাশের ক্ষুদ্রতম একটি অংশ মাত্র, এমনটাই বলছে নাসা। কতটা ছোট তা বোঝাতে নাসা বলেছে হাতের তালুতে ধরা একটা ছোট্ট বালির দানা বলা যেতে পারে ওই ছবিকে।

Next Post Previous Post