হোমিও দর্শনের বিষয়বস্তু ও পরিসীমা
হোমিওপ্যাথিক দর্শনের বিষয়বস্তুই ইহার পরিসীমা নির্দেশ করে। হোমিওপ্যাথিক দর্শনের বিষয়বস্তু অত্যন্ত ব্যাপক ও বিস্তীর্ণ। কারণ চিকিৎসা সম্পর্কীয় সমস্ত বিষয়ই ইহার আলোচনার বিষয়বস্তুর অন্তর্গত। নিম্নে হোমিও দর্শনের আলোচ্য বিষয়গুলি সংক্ষেপে আলোচনা করা হইল ।
জীববিজ্ঞান : চিকিৎসা দর্শনের মূল বিষয়বস্তু মানুষ। আবার মানুষের আলোচনা জীববিজ্ঞানের অন্তর্ভূক্ত। সুতরাং মানুষকে জানিতে হইলে জীববিজ্ঞান সম্বন্ধে জ্ঞান লাভ অপরিহার্য।
মনোবিজ্ঞান : জীববিজ্ঞানে দেহের ভৌতিক ও রাসায়নিক ক্রিয়া আলোচনা করা হয়। সুতরাং মন সম্পর্কে জানিতে হইলে মনোবিজ্ঞান একান্ত প্রয়োজন।
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা শাস্ত্রে মানুসিক লক্ষণের গুরুত্ব অপরিসীম। সুতরাং মনোবিজ্ঞান হোমিওপ্যাথিক দর্শনের আওতাভুক্ত।
শরীর সংস্থান (Anatomy) : দেহের বিভিন্ন অঙ্গ ও অংশের উপর বিভিন্ন ঔষধ বিশেষভাবে ক্রিয়া করিয়া থাকে। সুতরাং মানবদেহের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ গঠন সম্বন্ধে জ্ঞান লাভ ছাড়া সঠিক ঔষধ প্রয়োগ সম্ভব নয়। তাই ঔষধ সম্বন্ধে দার্শনিক জ্ঞান লাভের জন্য শরীর সংস্থান এর বিশেষ প্রয়োজন রহিয়াছে এবং শরীর সংস্থানও দর্শনের আওতাভুক্ত।
শারীর বিজ্ঞান (Physiology) : ঔষধের ক্রিয়া পদ্ধতি সম্বন্ধে জ্ঞানার্জনের জন্য শারীর বিজ্ঞানের জ্ঞান অপরিহার্য এবং শারীর বিজ্ঞানও দর্শনের আওতাভুক্ত।
রসায়ণশাস্ত্র : হোমিও দর্শনে ঔষধের রাসায়নিক গুণ ও ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া আলোচনা করা হয় । তাই রসায়ণশাস্ত্র হোমিও দর্শনের পরিসীমার অন্তর্ভুক্ত।
পদার্থবিজ্ঞান : হোমিও দর্শনে জীবনের গতি, পদার্থ ও শক্তির আলোচনা করা হয়। সুতরাং পদার্থ বিজ্ঞান হোমিও দর্শনের অন্তর্ভুক্ত।
প্যাথলজি : হোমিও দর্শনে নৈদানিক পরিবর্তনের কারণ অন্বেষণ করে। নিদান তত্ত্বের সাথে রোগের সম্পর্ক নির্ণয় করার চেষ্টা করে। তাই প্যাথলজিও হোমিও দর্শনের অন্তর্ভুক্ত।
নীতিশাস্ত্র : হোমিওপ্যাথিক দর্শনে অনেকক্ষেত্রে উচিত ও অনুচিত কার্যের প্রশ্ন আছে। সুতরাং নীতিশাস্ত্র হোমিও দর্শনের আওতাভুক্ত।
যুক্তিবিজ্ঞান : প্রত্যেক দর্শন যুক্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। হোমিও দর্শনও যুক্তির উপর প্রতিষ্ঠিত । সুতরাং যুক্তিবিজ্ঞান অবশ্যই হোমিওপ্যাথির অন্তর্ভুক্ত।