হোমিওপ্যাথিতে হোমিও দর্শনের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব
হোমিওপ্যাথি একটি উন্নতমানের সার্থক চিকিৎসা বিজ্ঞান। নীরবে, নিরূপদ্রবে, স্থায়ীভাবে এবং সর্বাপেক্ষা সুখবোধ্য বিধান মতে চিকিৎসা করা এবং রোগারোগ্য করাই হোমিওপ্যাথির মূল আদর্শ। হোমিও দর্শন আমাদিগকে শিক্ষা দেয় সেই আদর্শ ।
ফিলসফি বা দর্শন পাঠ করিলে আমরা স্রষ্টা ও সৃষ্টির রহস্য, তাহাদের সম্পর্ক, সৃষ্টির উদ্দেশ্য, মানবতাবোধ, মমত্ববোধ, ব্যাধি কি ও কেন? রোগ ও রোগীর সম্পর্ক, ঔষধ প্রয়োগের নিয়ম, নীতি ও আদর্শ এবং উদ্দেশ্য, কখন কিসে কোন রোগ কিভাবে বাড়ে বা কমে, কোন শক্তিতে কখন ঔষধ প্রয়োগ করিতে হইবে, সোরা, সিফিলিস ও সাইকোসিস কি ও কেন? ইহাদের আক্রমণ ও প্রতিকার, তরুণ রোগ, পুরাতন রোগ ও তাহাদের চিকিৎসা, রোগীর মনের ও দেহের অবস্থা প্রভৃতি আমরা দর্শন পাঠে জানিতে পারি। দর্শন বা ফিলসফি না পড়লে চিকিৎসা করা যায় না এবং হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক হওয়া যায় না। ফিলসফি আমাদিগকে জ্ঞানের, বিজ্ঞানের, হোমিও বিজ্ঞানের প্রতি শ্রদ্ধা, বিশ্বাস ও ভালবাসা শিক্ষা দেয়।
হোমিওপ্যাথির বিচ্ছিন্ন ও বিক্ষিপ্ত উপাত্তগুলিকে গ্রথিত ও সংলগ্ন করিয়া উহাদের কার্যকরী ও উদ্দেশ্যসাধনের সমর্থ করিয়া তুলিতে হোমিও দর্শনের যথেষ্ট প্রয়োজনীয়তা রহিয়াছে।
হোমিও দর্শন প্রত্যেকটি নীতির বিশ্লেষণ দ্বারা হোমিওপ্যাথিকে আরোগ্য সাধনের উপযোগী এক অখণ্ড যান্ত্রিক দেহরূপে চিকিৎসকের সামনে তুলিয়া ধরে। ইহা হোমিও ঔষধ প্রয়োগের ক্ষেত্রসীমা নির্ধারিত করিয়া চিকিৎসককে সার্থক ও সুনিপুন করিয়া তোলে। হ্যানিম্যানের চিকিৎসা দর্শনের স্বরূপ উদ্ঘাটনে হোমিও দর্শন অপরিহার্য।