অনুমোদন বিহীন দেশে অবৈধ হোমিওপ্যাথিক কলেজ ও ভর্তি বাণিজ্য
বাংলাদেশের কোন হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠা বা সরকারি অনুমোদন বা সরকারি স্বীকৃতি নিতে হলে তা অবশ্যই সরকারি আইন-বিধিমালা অনুযায়ী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ড হতে যৌথ স্বীকৃতি নিতে হয়। সে স্বীকৃতির প্রজ্ঞাপনে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষর করলে তা সরকারি গ্রেজেট হয়, তারপর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় হতে প্রজ্ঞাপন হিসাবে জারি হয়। সরকারিভাবে কলেজ স্বীকৃতি না পেলে সেটাকে কোন হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ বলা যাবেনা ও কলেজ অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রভাষক/শিক্ষক, কর্মচারি পরিচয় দেওয়া যাবেনা। কলেজ প্রতিষ্ঠায় ভৌগোলিক দূরত্ব, কলেজের নামে সাব-রেজিস্ট্রি হতে দলিলকৃত নিজস্ব জায়গা থাকতে হবে, কলেজের নিজস্ব অবকাঠামো থাকতে হবে, জনবল তথা অধ্যক্ষ এর যোগ্যতা, শিক্ষক/কর্মচারি নিয়োগের যোগ্যতার সকল কাগজপত্র বোর্ড যাচাই-বাছায় করে অনুমোদন সহ সরকারি স্বীকৃতি কলেজ পেলে তাঁরপর তা গেজেট কপি বের হবে। তাঁরপর কলেজের নাম ও কলেজ কোর্ড নম্বর সহ বোর্ডের ওয়েবসাইডে লিস্টে উঠবে, তাঁরপর আইন-বিধি অনুযায়ী প্রতি বছর শিক্ষার্থী ভর্তি করার অনুমতি বোর্ড দিবে তা ওয়েবসাইডে ও জাতীয় পত্রিকায় বোর্ডের স্মারকসহ অফিসিয়ালভাবে প্রকাশিত হবে। সেখানে কোন কোন কলেজ ভর্তি হবার অনুমতি পেল তা জানা যাবে। কলেজের নামে নিজস্ব রেজিস্ট্রিকৃত জায়গা ও অবকাঠামো তাঁরপর সরকারি স্বীকৃতির আবেদন, স্বীকৃতির আবেদন মানে অনুমোদন নয়, তাঁরপর বোর্ডের অনুমতি নিয়ে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি কোনটা আছে কি? এগুলো অনিয়ম বন্ধে ও আইনের অধিনে কঠোর পদক্ষেপ নিতে সরকারি আইন, ভ্রাম্যমান আদালত বা মোবাইল কোর্ট, বোর্ড কর্তৃপক্ষ ও বোর্ড প্রতিনিধিগণ এবং সরকারের পদক্ষেপ কি?
বাংলাদেশে বেশকিছু জেলা-উপজেলায় ব্যাঙের ছাঁতার মত অবকাঠামো বিহীন ও সরকারি অনুমোদন নেই হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ নাম দিয়ে হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ গড়ে উঠেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ড এবং দেশের মাঠ পর্যায়ে আইন প্রয়োগকারি কর্তৃপক্ষ তথা জেলা প্রশাসন/নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের কোন ভূমিকা লক্ষ্য করা যাচ্ছেনা। এগুলো জনবল ও অবকাঠামো বিহীন সরকারি স্বীকৃতি বিহীন অবৈধ হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ, জনবল ও অবকাঠামো বিহীন সরকারি স্বীকৃতি বিহীন অবৈধ হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি এবং ভর্তি বাণিজ্য হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা শিক্ষার ভবিষ্যত কি?
বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা শিক্ষা আইন (প্রম্তাবিত) আইনটি বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে পাস ও কার্যকর হলে বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কাউন্সিলও গঠিত হবে। সেগুলোর অধিনে থাকবে হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ, মেডিকেল শিক্ষার মান, কলেজ স্বীকৃতি, কলেজ নবায়ন, কলেজ বাতিল ক্ষমতা, হোমিওপ্যাথি নিবন্ধিত চিকিৎসকদের জন্য নিজস্ব কম্পিউটার ডাটাবেজ (তথ্যভান্ডার) সহ অন্যান্য ডাটাবেজ, হোমিওপ্যাথদের নিয়ন্ত্রণ, অনিয়ম, ভুয়া ডাক্তার ও ভুয়া প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করতে ঢাকাসহ দেশব্যাপি বা দেশের যে কোন স্থানে অভিযান চালাতে হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কাউন্সিলে নিয়োগকৃত নিজস্ব নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও বিচারিক ক্ষমতা থাকবে এবং জেল-জরিমানা সহ অন্যান্য ক্ষমতা।
ওয়েবসাইড ভিজিট করুন :
বাংলাদেশ সরকার এর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এর বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ড।www.homoeopathicboardbd.org
পরিশেষ : স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও হোমিওপ্যাথি বোর্ড অনুমোদন বিহীন বাংলাদেশে জেলা-উপজেলায় সরকারি স্বীকৃতি বিহীন, অবকাঠামো ও জনবল কাঠামো বিহীন, অবৈধ হোমিওপ্যাথিক কলেজ ও ভর্তি বাণিজ্য বন্ধে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এর স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর, বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ড প্রশাসন তথা পরিচালনা কমিটিকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। কিছু ব্যক্তি তথা সুবিধাবাদীরা অবৈধভাবে বিশেষ সুবিধা পাওয়াতে নতুন প্রস্তাবিত হোমিওপ্যাথিক আইন পাস করছেনা। এজন্যই ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দ হতে আইন কখনও বোর্ডে ও কখনও মন্ত্রণালয়ে পড়ে আছে। আইন পাসে অনিহা। প্রস্তাবিত নতুন কলেজ অনুমোদন ও নিয়োগ এবং বিশেষ সুবিধা তথা বাণিজ্য বন্ধ হবে দেখেই বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা শিক্ষা আইন (প্রস্তাবিত) ২০১৩ সাল হতে পড়ে আছে, কখনও বোর্ডে বা কখনও মন্ত্রণালয়ে, তা জাতীয় সংসদে উল্থাপন হয়না ও পাসও হয়না। অবৈধ কলেজ, প্রস্তাবিত কলেজ, অবৈধ ভর্তি বাণিজ্য, নিয়োগ বাণিজ্য, বিশেষ সুবিধা ও বিশেষ বাণিজ্য বন্ধের দিকে সকলে দৃষ্টি না দিলে যথাযথভাবে প্রস্তাবিত হোমিওপ্যাথিক আইনও গন্তব্যে যাবেনা ও পাসও হবেনা, হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কাউন্সিলও হবেনা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির অনুমোদিত ও গেজেট সহ হোমিওপ্যাথিক কলেজের নিয়োগ বিধিমালা প্রজ্ঞাপন না থাকার কারণে সরকার স্বীকৃত প্রাপ্ত কলেজ গুলোতে নিয়োগের নামে জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক কোন পত্রিকায় কোন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই অতিগোপনে নিয়োগ তথা নিয়োগে অনিয়ম, যোগ্যতা সম্পন্নরা শিক্ষকতায় আসতে পারছেনা, শিক্ষার মান উন্নয়ন হচ্ছেনা, স্বীকৃত কলেজ গুলোও সরাসরি এমপিওভুক্ত বা সরকারিকরণ হচ্ছেনা।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এর বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ড ও বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ড পরিচালনা কমিটির কার্যক্রম তথা ভূমিকা প্রশ্নের সম্মুখীন!
(তথ্যসূত্র/নথি ও মতামত)
====================
ডা. মো. আব্দুস সালাম (শিপলু)।
১৯ জুলাই ২০২২ খ্রিষ্টাব্দ।